মঙ্গলবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৩

‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’য় কবি ও বহুমাত্রিক লেখক সাযযাদ কাদির-এর বই

প্রবন্ধ-গবেষণা
বাংলা আমার। হাজার বছরের কবি ও কবিতা সম্পর্কে প্রতিষ্ঠাবিরোধী আলোচনা। প্রকাশক: প্রিয়মুখ প্রকাশনী
     (স্টল নং ১১৬)
বিচলিত বিবেচনা। সংবাদ, সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ভিন্ন ধারার আলোচনা। প্রকাশক: জ্ঞান বিতরণী
(স্টল নং ১৩৬-১৩৭)
চুপ! গণতন্ত্র চলছে...। সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গে প্রবন্ধ নিবন্ধ কলাম। প্রকাশক: দিব্য প্রকাশ
(স্টল নং ২১২-২১৪)
সহচিন্তন। ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ব্যতিক্রমী আলোচনা। প্রকাশক: ঝিঙে ফুল (স্টল নং ৪-৫)

শিশুতোষ
তেপান্তর। লোকরচনার সঙ্কলন। প্রকাশক: প্রিয়মুখ প্রকাশনী (স্টল নং ১১৬)
রসচৈনিক। চীনের গল্পকথার সঙ্কলন। প্রকাশক: দিব্য প্রকাশ (স্টল নং ২১২-২১৪)

সম্পাদনা
এই সময়ের কবিতা। বিশাল বাংলার ১০০ কবির রচনা। প্রকাশক: সাহস পাবলিকেশনস্‌ (স্টল নং ১০৩)
শ্রেষ্ঠ কবিতা: শক্তি চট্টোপাধ্যায়। প্রকাশক: হাওলাদার প্রকাশনী (স্টল নং ৪১৫)

সাযযাদ কাদির-এর বই

কবিতা: যথেচ্ছ ধ্রুপদ; রৌদ্রে প্রতিধ্বনি; দূরতমার কাছে; দরজার কাছে নদী; আমার প্রিয়; এই যে আমি; কবিতাসমগ্র;
জানে না কেউ; বিশ্ববিহীন বিজনে; বৃষ্টিবিলীন
গল্প: চন্দনে মৃগপদচিহ্ন; অপর বেলায়; রসরগড়
উপন্যাস: অন্তর্জাল; খেই
গবেষণা: ভাষাতত্ত্ব পরিচয়; হারেমের কাহিনী: জীবন ও যৌনতা; রবীন্দ্রনাথ: মানুষটি; রবীন্দ্রনাথ: শান্তিনিকেতন;
বাংলা আমার; সহচিন্তন; বিচলিত বিবেচনা; চুপ! গণতন্ত্র চলছে...
সঙ্কলন: রাজরূপসী; প্রেমপাঁচালি; পৃথিবীর প্রিয়প্রণয়ী; নারীঘটিত
শিশুতোষ: তেপান্তর; মনপবন; রঙবাহার; বীরবল নামা; এফফেনতি; উপকথন; উপকথন আরও; উপকথন
আবারও; উপকথন ফের; ইউএফও: গ্রহান্তরের আগন্তুক; জমজমাট; জানা আছে জানা নেই; সাগরপার
ভাষান্তর: লাভ স্টোরি; রসচৈনিক; বাংলার লোকরচনা
স্মৃতিকথা: নানা রঙের দিন
সম্পাদনা: প্রবন্ধ সংগ্রহ: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়; প্রবন্ধ সংগ্রহ: বেগম রোকেয়া; শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা

শনিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৩

বই ও বইয়ের মেলা

সাযযাদ কাদির: ভাষা শহিদদের স্মৃতিবাহী ফেব্রুয়ারি আসন্ন। আর ক’দিন পরেই রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে শিল্পকলা একাডেমী পর্যন্ত গোটা রমনা এলাকা মুখরিত হবে সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা অনুষ্ঠান-আয়োজনে। কবিতা উৎসব, নাট্য অনুষ্ঠান, শিল্প প্রদর্শনী, সংগীতের আসর, গ্রন্থমেলাসহ বহু বিচিত্র বর্ণাঢ্য প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যাবে এ ঐতিহ্যিক বলয়ে। এমন আয়োজন অবশ্য হবে সারা দেশেই। শহরে, পাড়ায়, গ্রামে। তবুও ওই সংস্কৃতি বলয়ের আয়োজন যেন সব কিছুকে ছাড়িয়ে। এখানে দেশের এ প্রান্ত ও প্রান্ত থেকে আসেন শিল্পী-সাহিত্যিক সকলে। প্রবাসী লেখকরাও আসেন এই সময়টায়। নানা দেশ থেকে গুণীজনেরা আসেন বিভিন্ন আয়োজন-অনুষ্ঠানে। নবীন প্রবীণ সকলের এক মিলনমেলা হয়ে ওঠে গোটা ফেব্রুয়ারি মাস। আর সব আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু বাংলা একাডেমীর ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। এ মেলাতেই আসে বছরের সব নতুন বই, আর বলতে গেলে সারা বছরের বই বিক্রিও এই সময়টায়। কাজেই লেখক, প্রকাশক ও পাঠকদের এ মেলায় নতুনত্বই প্রধান। এখানে আত্মপ্রকাশ করেন নতুন লেখক, চমক জাগান নতুন প্রকাশক। নতুন সৃষ্টি হয়েছে পড়ার নেশা- ভিড় করেন সেই পাঠকরাও।
‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ পাড়ি দিয়ে এসেছে দীর্ঘ পথ। এ পথে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে, সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে- কিন্তু এর আকর্ষণ আছে তেমনই। এবারও উদ্যোগ আছে নতুন কিছুর। শুনেছি সে সব উদ্যোগ মেলাকে প্রকৃত প্রকাশকদের মেলায় পরিণত করার। বিভিন্ন সংগঠন, সমিতি, সংস্থাকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হবে না এবার। এ ধরনের উদ্যোগ অতীতেও নেয়া হয়েছে বহুবার। কিন্তু মহলবিশেষের চাপে ফলপ্রসূ হয় নি সে সব উদ্যোগ। এবারও চাপ আছে, তবে মহাপরিচালক তা দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করছেন বলে জেনেছি। এজন্য তিনি সাধুবাদ ও সমর্থন পাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট সকল মহলের- এমন খবরও পেয়েছি। এ ক্ষেত্রে আমরাও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি তাঁকে।
গ্রন্থমেলা’র বড় সমস্যা প্রচণ্ড ভিড়। এদিকে শাহবাগ, ওদিকে শিক্ষাভবনের কাছ থেকে ধরতে হয় দীর্ঘ লাইন। ভেতরেও ঠেলাঠেলি ভিড়। এবার মেলাকে একাডেমীর ভেতরেই রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জেনেছি- তাতে আশঙ্কা করছি ভিড় আরও প্রচণ্ড হয়ে উঠতে পারে। বইয়ের পাঠক-ক্রেতারা বই কেনেন নেড়ে চেড়ে দেখে, কিন্তু সে সুযোগটা থাকে না ঠেলাঠেলিতে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই হতাশ হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এই হৈহৈ ভিড়ের কারণে নজরুল মঞ্চে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অনেক জ্ঞানী-গুণী এলেও তাঁদের একটি কথাও শোনা যায় না। এ অবস্থায় মেলার পরিসর বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে ভাবতে পারেন একাডেমী কর্তৃপক্ষ। আলোচনা অনুষ্ঠানের চত্বরটিতে স্টল বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন কোনও-কোনও প্রকাশক। এ প্রস্তাবটি ভেবে দেখা যেতে পারে বলে মনে করি আমরা। কারণ আলোচনা-সেমিনারের আয়োজন ভবনের অডিটোরিয়ামে করা হলে তা হবে কোলাহলমুক্ত, বক্তা ও দর্শক-শ্রোতাদের জন্য সুখকর।
তবে বইয়ের দাম দিনে-দিনে বেড়ে যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তা বলতে গেলে সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে এখন। প্রকাশকেরা বলেন, মুদ্রণ সামগ্রী-সরঞ্জামে সরকার যদি কর হ্রাস না করে তবে দাম এমন চড়তেই থাকবে। এছাড়া অডিও-ভিসুয়াল মিডিয়ার ক্রমবিস্তৃতি বইয়ের জগৎকে ফেলেছে চাহিদার সঙ্কটে। আগের মতো আর পাঠক-ক্রেতা নেই বইয়ের। এ অবস্থায় প্রকাশনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা হয়ে উঠেছে অপরিহার্য। আমাদের মনে রাখা দরকার বই মানুষের নিত্যসঙ্গী। এ সঙ্গী আমাদের জীবনের বিকাশে রাখে অন্যতম প্রধান উৎস-ভূমিকা। বই সম্পর্কে কোথাও পড়েছিলাম-
“Books are a man’s soulmate. What would we do without books? Books and readers are inseparable from each other. Right from childhood, a person is taught to value books. He carries books in his bag to school, takes care of them by covering them and attaching a label with his name and feels a sense of pride in being its owner. Books lend a person with a feeling of self-importance as well. Books help us to stretch the frontiers of our knowledge. The more a man reads, the more learned and knowledgeable he becomes.”  এ কথাগুলির গুরুত্ব অনুধাবন করা উচিত সকলেরই।
sazzadqadir@rediffmail.com

বৃহস্পতিবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৩

শত্রু শত্রু খেলা

রাজনীতি ও কূটনীতি একটি খেলা। আগেও ছিল, এখনও দেশে দেশে ও দলে দলে এ খেলায় মেতে আছেন কুশলী খেলোয়াড়েরা। নিজেদের অপকর্ম-দুষ্কর্ম আড়াল করতে, ব্যর্থতা ঢেকে রাখতে তারা চালিয়ে যান এ খেলা। জনগণ যাতে প্রতিবাদ না করতে পারে সে জন্য চলে তাদের দৃষ্টি অন্য দিকে ঘোরানোর চেষ্টা। নানারকম আবেগপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, ভাবাবেগের জোয়ার জাগিয়ে তুলে তাদের ক্ষমতা বা অবস্থান বজায় রাখার চলে প্রাণপাত প্রয়াস। তাই দেখি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের এই উপমহাদেশের দু’টি দেশ ভারত ও পাকিস্তান দশকের পর দশক ধরে মেতে আছে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায়। দেশে অভ্যন্তরীণ সঙ্কট তীব্র হয়ে উঠলে তারা ওই খেলাতেই মেতে ওঠেন সমস্বরে। সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ে, নেতাদের গলায় জোর বাড়ে, আর জনগণ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ক্রমাগত হুমকি-ধমকির গর্জনে। বর্তমান দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন এবং অন্যান্য নানা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ও পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের দুই সরকারই হয়ে পড়েছে টালমাটাল। এ অবস্থায় এমন একটি কার্যকর খেলা রক্ষাও করতে পারে তাদের। তবে এমন খেলা খেলতে গিয়ে আগেও কয়েকবার সত্যি-সত্যি যুদ্ধেও জড়িয়ে পড়েছে দু’ দেশ, সীমান্তে বিভিন্ন সময়ে রক্তপাত তো আছেই- এবারও এ খেলার পরিণতি কি হয় তা অবশ্যই দেখার বিষয়।
এসব খেলা দেখতে দেখতে মাঝে মাঝে মনে হয় আমাদের দেশের দু’টি বড় দল হয়তো এমন শত্রু শত্রু খেলা খেলেই নিজেদের যাবতীয় ব্যর্থতা-দুর্বলতা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে রাখতে চায় দেশবাসীর। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতাসহ আমাদের গভীর আবেগের আরও নানা বিষয়াদিকে কাজে লাগিয়ে তারা বজায় রাখতে চায় ক্ষমতার খেয়োখেয়ি, দুর্নীতির কারসাজি।
তবে রাজনীতি-কূটনীতির এ রকম অব্যাহত খেলা দেশ জাতি সমাজের ওপর অন্তহীন দুর্ভোগই টেনে আনছে বারবার। মানুষের ভাগ্য ফেরাবার উদ্যোগ আয়োজন নেই, কিন্তু নির্যাতন নিপীড়ন চলছেই। বিশ্বসমাজ চিন্তাচেতনা ধ্যান-ধারণায় দিনে দিনে এগিয়ে গেলেও আমরা এখনও খাবি খাচ্ছি প্রতিক্রিয়ার ঘূর্নাবর্তে। এ ব্যাপারে উদাহরণ টানছি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের তুলনায় অনেকখানি প্রাগ্রসর ভারত থেকে- এ থেকে বুঝবো আমাদের সমাজ এখন কোথায়, এ সমাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কারা।
গত ১৬ই ডিসেম্বর রাতে নয়া দিল্লি’র একটি বাসে ২৩ বছর বয়সী এক প্যারামেডিক ছাত্রী শিকার হয় গণধর্ষণের। পত্রপত্রিকায় ভারতের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির মন্তব্য প্রকাশিত হয়েছে এ ঘটনা এবং ধর্ষণ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সম্পর্কে।
ধর্ষণের দায়ে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তিনজনের পক্ষে আদালতে দাঁড়িয়েছেন আইনজীবী মনোহর লাল শর্মা (৫৬)। তিনি বলেছেন, ঘটনার জন্য ধর্ষিতা ও তার পুরুষবন্ধুই পুরোপুরি দায়ী। অত রাতে অবিবাহিত যুগলের ঘুরে বেড়ানোর কারণে এমনটি ঘটেছে। কোন সম্ভ্রান্ত মহিলা ধর্ষণের শিকার হন নি কখনও। সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়েদের গায়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডনরাও হাত দেয় না।
ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র নেতা, ছত্তিশগড়ের রায়পুর আসনের সংসদ রমেশ বৈশ (৬৬) বলেছেন, যুবতী বা মহিলাদের ধর্ষণের ব্যাপারটা বুঝতে পারি। তবে শিশু ও বালিকারা যদি ধর্ষণের শিকার হয় তবে তাকে অবশ্যই জঘন্য অপরাধ বলতে হবে। এ ধরনের অপরাধীকে অবশ্যই ফাঁসি দিতে হবে।
আহমেদাবাদের ধর্মীয় নেতা আসারাম বাপু (৭২) বলেছেন, ধর্ষণের ঘটনার জন্য মেয়েটিই দায়ী। ধর্ষকদের ‘ভাই’ সম্বোধন করে প্রাণভিক্ষা চেয়ে নিজেকে বাঁচাতে পারতো সে।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ-এর সর্সঙ্ঘচালক (সর্বোচ্চ প্রধান) মোহন ভাগবত (৬৩) বলেছেন, ধর্ষণ ঘটে নাগরিক ‘ইন্ডিয়া’য়- গ্রামীণ ‘ভারত’-এ ঘটে না। পশ্চিমা সংস্কৃতির কুফল এটা।
মহারাষ্ট্র সমাজবাদী পার্টি-র রাজ্যপ্রধান ও সাংসদ আবু আজমি (৫৮) বলেছেন, অনাত্মীয় লোকজনের সঙ্গে মেয়েদের বাইরে যাওয়া উচিত নয়। দিল্লিতে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমা সংস্কৃতির কারণে। গাখোলা পোশাকে মেয়েরা ঘুরে বেড়ালে পুরুষরা আকৃষ্ট হবেই।
মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা’র প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট বাজ ঠাকরে (৪৫) বলেছেন, নয়া দিল্লিতে ধর্ষণের ঘটনার জন্য বিহারিরা দায়ী। বিহারের বাইরে যেখানে যায় এরা সেখানেই আকাজ-কুকাজ করে।
বিজেপি নেতা, ছত্তিশগড়ের স্বরাষ্ট্র, কারাগার ও সমবায় বিভাগের মন্ত্রী নানকি রাম কাঁওয়ার বলেছেন, মেয়েদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে গ্রহদোষে। তাদের গ্রহ এখন প্রতিকূলে।
ছত্তিশগড় রাজ্য নারী কমিশনের প্রধান বিভা রাও বলেছেন, ধর্ষণ ঘটনার জন্য মেয়েরাও সমান দায়ী। তাদের মোটেও যৌন উত্তেজক পোশাক পরা উচিত নয়।
হরিয়ানার হিসার জেলার সামাইন খাপ পঞ্চায়েতের প্রধান সুবে সিং বলেছেন, ধর্ষণের জন্য ফাঁসির বিধান করা হলে এর অপব্যবহার হবে। অনেক মিথ্যা ধর্ষণ মামলা হবে। এর বিচার ৩০২ ধারাতেই সম্ভব।
সিনিয়র সিপিআই-এম নেতা, সাবেক মন্ত্রী আনিসুর রেহমান ধর্ষণ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পশ্চিমঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আপনি ধর্ষণের শিকার মেয়েদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ দিতে চেয়েছেন- তা আপনাকে কত দিতে হবে? আপনি ধর্ষিত হলে আপনার জন্য ক্ষতিপূরণ কত ধার্য হবে?
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সাবেক আন্তর্জাতিক প্রধান অশোক সিংহল বলেছেন, পশ্চিমাদের মতো জীবনযাপনের প্রবণতা বিপজ্জক হারে বাড়ছে। এগুলো আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এসবের কারণে ধর্ষণ-নির্যাতন ঘটেছে।
ওদিকে পুদুচেরি সরকার স্কুলের মেয়েদের পোশাক পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে। যৌন অপরাধ কমাতে তার স্কুল পোশাকের ওপর ওভারকোট পরতে বলেছে। শিক্ষামন্ত্রী টি তিয়াগর্জন (৫১) বলেছেন, এ রাজ্যের স্কুলছাত্রীদের ওভারকোট পরতে হবে, আলাদা বাসে যাতায়াত করতে হবে আর স্কুলে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না।
সিনিয়র বিজেপি নেতা, মধ্যপ্রদেশের শিল্পমন্ত্রী কৈলাশ বিজয়ভার্গিয়া (৫৭) বলেছেন, আসল কথা হলো সীমা। যদি তুমি সীমা লঙ্ঘন করো তবে রামায়নে সীতার যা হয়েছে তোমারও তা-ই হবে। লক্ষ্মণ-রেখা পার হলে রাবণ তোমাকে অপহরণ করবে- সীতাকে যেমন করেছিল।
কংগ্রেস নেতা ও প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির পুত্র অভিজিৎ মুখার্জি (৫৩) বলেছেন, ধর্ষণের প্রতিবাদে মিছিলে যারা আসছে ছাত্রী নামে- তারা আসলে সুন্দরী মহিলা। কড়া মেকআপ গেটআপ নিয়ে তারা আসছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় রূপে সেজে। এ ধরনের মহিলা ডিস্কোতে যায়, সাক্ষাৎকার দেয়- মিছিলে প্রতিবাদে তারা সিরিয়াস নয়।
অন্ধ্র প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি বৎস সত্যনারায়ণ (৫৫) বলেছেন, এত রাতে মেয়েটি কি করছিল বাইরে? মাঝরাতে স্বাধীনতা পেয়েছি বলে কি আমরা মাঝরাতে ঘোরাঘুরি করবো? ওই সময় একটি প্রাইভেট বাসে তার ওঠাই ঠিক হয়নি।
একই প্রসঙ্গে কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে ধর্ষিতা এক মেয়ে সম্পর্কে বলতে গিয়ে পশ্চিমঙ্গ মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ডা. কাকলি ঘোষ দস্তিদার (৫৪) বলেছেন, এই মেয়েটি আসলে যৌনকর্মী। এটা মোটেও ধর্ষণ নয়। দু’পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে- মেয়েটি আর তার খদ্দেরের সঙ্গে।
এরপর কোন মন্তব্য নিরর্থক। ভারতে তথা উপমহাদেশে ধর্ষণ সম্পর্কে সমাজনেতা-নেত্রীদের চিন্তাচেতনা কোন পর্যায়ে আছে তা এসব উক্তি থেকেই সহজে অনুমেয়।
sazzadqadir@gmail.com

বৃহস্পতিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৩

বিশ্বজিৎ দাস: প্রয়াণসম্ভাষণ

সেদিন খুব ভয় পেয়েছিলে তুমি, বিশ্বজিৎ। ৯ই ডিসেম্বর, ২০১২ দিনটি সত্যিই বড় ভয়ের ছিল। ১৮ দলীয় জোট দিয়েছিল সড়ক অবরোধ কর্মসূচি। সরকার দেখিয়েছিল রক্তচক্ষু। মন্ত্রী দিয়েছিলেন হুঙ্কার। ডেকেছিলেন দলীয় ক্যাডারদের মাঠে নেমে ব্যবস্থা নিতে। অস্ত্রশস্ত্রে সেজে তারা মাঠে ছিল সেদিন রক্তপিপাসা নিয়ে। তেমন এক ভয়ানক দিনে পথে বেরিয়েছিলে তুমি, বিশ্বজিৎ দাস। বেরিয়েছিলে জীবিকার টানে। দারিদ্র্যের পীড়নে। সামান্য দরজি দোকানি একটা কাজের দিন অলস কাটাতে পারে না বাড়িতে শুয়ে বসে ঘুমিয়ে। কাজের তাগিদ সেদিন বাড়িছাড়া করেছিল তোমাকে। এর অনেক আগেই বেঁচে থাকার দায়ে হয়েছিলে গ্রামছাড়া, এসেছিলে এই দুঃস্বপ্নের শহরে। দুঃস্বপ্ন বলছি, মাত্র ২৪ বছরের নবীন যুবক, হয়তো স্বপ্নও কিছু ছিল তোমার। ছিল তো নিশ্চয়ই, দারিদ্র্যের পেষণ-পীড়ন মুছে ফেলতে পারে নি সব কিছু, তাই সামনের এই ফেব্রুয়ারিতেই নির্ধারিত ছিল তোমার বিয়ের তারিখ। অপেক্ষা করছিল একজন নববধূ। সাজানো একটা সংসারের সাধ ছিল তারও। কিন্তু সেদিন তুমি চলেছো তোমার কাজের ঠিকানায়... শাঁখারিবাজারের কোন গলিতে। চলেছো নিতান্ত অনিচ্ছায়। হরতাল অবরোধ উত্তেজনা থেকে দূরে থাকা মানুষ তুমি। রাজনীতি তোমাকে টানে না, ক্ষমতার খেয়োখেয়ি  নয় তোমার জন্য। তবুও খদ্দেরের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে তোমাকে বেরোতে হয়েছে আপাত নিরাপদ গৃহকোণ থেকে। কিন্তু পথে সেদিন বিরোধীদের কর্মসূচি প্রতিরোধে শুরু হয়েছিল অস্ত্রের মহড়া। ভেবেছিলে আগেভাগে পার হয়ে যেতে পারবে বিপদের ঘেরটুকু। কিন্তু না, তুমি গিয়ে পড়লে ভয় দেখানো ভয়ানকদের মাঝখানে। মিছিল শুরু হলো, বোমা ফাটলো, আর তুমি খুব ভয় পেয়ে গেলে, বিশ্বজিৎ। কি হয়-কি হয় ভয়ে তুমি ছুটলে এদিক-সেদিক, এখানে-ওখানে। তখন তোমার দিকে তাড়া করে আসে ভয়ঙ্করেরা। তোমার পিছু নেয় রক্তপিশাচেরা, ধাওয়া করে তোমাকে। প্রকাশ্যে তারা হামলা চালায় তোমার ওপর। চাপাতি দিয়ে কোপায়, রড দিয়ে পিটায়, ছুরি দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে। কিল ঘুষি চড়-থাপড় লাথি মারে অবিশ্রান্ত গতিতে। ছুটে পালাতে চাও, কিন্তু কোথায় আশ্রয়? খুনের নেশায় ক্ষিপ্ত সেই হিংস্র বর্বরেরা পিছু ছাড়ে না তোমার। টেনেহিঁচড়ে ধরে নিয়ে আসে সব আশ্রয় থেকে, ঘিরে ফেলে তোমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে খুনিচক্র। তখন রাষ্ট্র ছিল কোথায়? ছিল  কাছেই। রাষ্ট্রের সেই সময়কার প্রতিনিধি পুলিশ ও অন্যান্য প্রতিনিধি ছিল নীরব দর্শকের ভূমিকায়। যাতে পরে তারা বলতে পারে ‘আমাদের চোখে কিছু পড়ে নি’, আর চেনা-জানা দুর্বৃত্তদের ‘অজ্ঞাত’ দাবি করে আসামি বানিয়ে কাগুজে মামলা ঠুকতে পারে। ওরা ছাড়াও ছিল সাধারণ মানুষ। জনতা। ছিলেন ২০ টিভি চ্যানেলের ৪০ কর্মী, ২০ পত্রিকা-বার্তা সংস্থার ৪০ সাংবাদিক। সব মিলিয়ে শতাধিক মানুষ। সবার চোখের সামনে ১২-১৩ জন দুর্বৃত্ত পিটিয়ে কুপিয়ে খুঁচিয়ে মেরেছে তোমাকে। কেউ এগিয়ে আসে নি, কথাটি বলে নি। অনেকে ছিল দেখেও না দেখার ভূমিকায়, অনেকে ছিল তথ্য নিয়ে উৎসুক, অনেকে ছিল তোমার নির্মম হত্যার দৃশ্যটি নিখুঁতভাবে ক্যামেরায় ধারণের কাজে ব্যস্ত। নাকি ওরা সবাই সেদিন ছিল ঘাতক পক্ষের সমর্থক? প্রকারান্তরে সহায়ক সহযোগী? নইলে ১০-১২টি চাপাতিধারীর বিরুদ্ধে ১০০র বেশি মানুষ কিছুই করবে না?
    তারপর রক্তাপ্লুত তুমি পড়ে থাকলে রাস্তায়। ছটফট করতে থাকলে জবেহ করা পশুর মতো, কাতরাতে থাকলে মৃত্যু-যন্ত্রণায়। না, সেদিন কেউ এগিয়ে যায় নি তোমার দিকে। কিন্তু গরিব-গুরবো বলে কথা! শেষে তোমার মতো এক গরিবকে তুলে নেয় এক গুরবো রিকশাওয়ালা। ভাড়া মিলবে না জেনেও বয়ে নিয়ে যায় হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেও সময়ের চিকিৎসা তোমার জোটে নি, বিশ্বজিৎ। হাতেপায়ে ধরেও চিকিৎসকদের মন গলাতে পারে নি রিকশাওয়ালা। ওই একজন মানুষই কেবল পাশে দাঁড়িয়েছিল তোমার, কিন্তু সে-ও ব্যর্থ হলো শেষে। ঘাতকদের হননেচ্ছাই পূরণ হলো সেদিন। আর হয়েই চললো দিনের পর দিন। সরকারের লোকজন তোমাকে বানাতে চাইলো বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থক, যেন তাহলেই হত্যা করাটা বৈধ হয়ে যায়। বলা হলো, তুমি নিশ্চয়ই বোমাবাজ। আর ঘাতকেরা? পুলিশের গলায়-গলায় চলে তারা, থাকেও। পুলিশ বলে, দেখি নি। চিনি না। মন্ত্রীরা বলে, ও দলে ঢুকে পড়া, ঘাপটি মারা, নাশকতাবাদী!
    বিশ্বজিৎ, আসলে তুমি কেউ নও এ দেশে। জনসংখ্যা শুমারিতে, রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণহানির তালিকায় একটা-একটা সংখ্যা মাত্র। তোমাকে কে মনে রাখে? বড় জোর প্রেস ক্লাবের সামনে একটা দায়সারা মানববন্ধন। তোমার জন্য শহিদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন নয়, সংসদ প্লাজায় শোক-প্রতিবাদ সমাবেশ নয়, সারা দেশে একদিন এক মিনিট নীরবতা পালন নয়। তোমার নামে ৯ই ডিসেম্বর বিশ্বজিৎ দিবস নয়। কিন্ত বিশ্বজিৎ, তুমি আমার আত্মীয়। ছয় দশকের বেশি কালের এই জীবনে পাঁচ দশক ধরে চলেছি কলম পিষে। এ কি এক জীবন! তোমার মতোই দারিদ্র্যের চাপাতি আমাকে কোপায় নিত্য, অসম্মান অপমান উপেক্ষার রড পিটায় ক্রমাগত, ছুরি-চাকু মেরে চলে যাবতীয় বিরুদ্ধতা। আজ তাই তোমার প্রতি আমার এই প্রয়াণসম্ভাষণ। বিশ্বজিৎ, তুমি আমার ভাই। তুমি বাংলাদেশের ভাই।

sazzadqadir@gmail.com

মঙ্গলবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৩

ও ছিল উচ্ছল প্রাণময়

ও ছিল উচ্ছল প্রাণময়। মাত্র বিকশিত হতে শুরু করেছিল ওর জীবন। জেগেছিল স্বপ্ন হয়ে ফুটে ওঠার কুঁড়ি। পড়া লেখা আর দেখা শোনা নিয়ে আবর্তিত ছিল দিন ও রাতের সময়। বয়স মাত্র তেইশ। ছিল একজন তরুণী ছাত্রী। তার ভুল ছিল রাতের বেলায় একটি ভুল বাসে উঠে পড়া। অন্তত কয়েকজন বলেছিল সে কথাটাই। আর বড় ভুল তো একটাই- ও একটি মেয়ে। ভুল নয় অপরাধ। রীতিমতো ঘোরতর অপরাধ। তাই একের পর এক ছ’জন পালাক্রমে ধর্ষণ করে তাকে। শিকারের ওপর শিয়াল-কুকুরের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে খাবলে কামড়ে ছিন্নভিন্ন করে তার অসহায় শরীরটাকে। তাতেও মেটে নি সেই নরপিশাচদের ক্ষুধা। আক্রোশ। লালসা। তারা একটি লোহার রড ঢুকিয়ে দেয় তার যৌনাঙ্গে। ক্ষতবিক্ষত করে তার গোপন প্রত্যঙ্গ। তখন পেটের ভিতর থেকে ছিঁড়েখুঁড়ে বেরিয়ে আসে তার ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদান্ত্র। সেই পুরুষ নামের পিশাচদের তৃপ্তি আসেনি বোধ হয় তখনও, তাই ওকে তারা ছুড়ে ফেলে দেয় রাস্তায়। যাতে ধুঁকে-ধুঁকে কাতরাতে-কাতরাতে ও মরে যায় কুকুর-বিড়ালের  মতো।
তারপর রাস্তার পাশে ও পড়ে থাকে একা। নগ্ন। ক্ষতবিক্ষত। উদোম। বিধ্বস্ত। ওই পথ দিয়ে যায় অনেকে, কিন্তু  কেউ একটু ফিরেও তাকায় না ওর দিকে। কনকনে শীতে কুঁকড়ে যাওয়া ওর উলঙ্গ শরীরের দিকে এক ফালি কাপড়ও ছুড়ে দেয় না কেউ। হায় হতভাগা মেয়ে! সুস্থ স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবন- না, তার জন্য আর ছিল না কোনভাবে। সেই অভিশপ্ত ১৬ই ডিসেম্বর রাতের পর পাঁচ-পাঁচবার জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পৌঁছে যায় ও। তখন কোন চেতনা ছিল না ওর। বোধশক্তি ছিল না। অন্ধকার গ্রাস করেছিল ওকে। আশঙ্কায় কম্পিত ছিল শেষ নিঃশ্বাসটুকু। কেবল কান্নাটি থামেনি কখনও। অবিরল কান্নায় সিক্ত হয়েছে ও।
কিন্তু তাতে আমাদের কি? ও তো আমার বোন নয়। আমার কন্যা নয়। কিন্তু হতে পারতো। আমার, তোমার, আরও অনেকের বোন, কন্যা। সে তো কেবল দিল্লি’র একটি মেয়ে নয়, সে সকল দেশের মেয়ে- সকলের মেয়ে।
এখন একটিই চিৎকার বাকি আছে আমাদের। সকলের সোচ্চার কণ্ঠে বলতে হবে- এই নৃশংসতা বন্ধ হোক। ওই পাষণ্ডদের দাও চরমতম শাস্তি। দৃষ্টান্তমূলক দণ্ড। জঘন্য কুকর্মের হোতা দুর্বৃত্তদের বিচার করো নিষ্করণ কঠোরতার সঙ্গে।
আর কোন কথা নেই আমাদের। কাতর স্বরে, রুদ্ধ কন্ঠে বলি- দিল্লির সেই তরুণী আর নেই। শনিবার ২৮শে ডিসেম্বর নীরবে ও চিরবিদায় নিয়েছে এই বর্বর-অধ্যুষিত সমাজ-সংস্কারের বিভীষিকা থেকে।
কামনা করবো- শান্তি পাক ওর আত্মা? না, প্রার্থনা করবো ওর খুনিদের হোক সম্ভাব্য চরমতম শাস্তি। সে শাস্তিকে করে তুলতে হবে সর্বকালীন, বিশ্বজনীন। এ বীভৎসতা শুধু দিল্লি নয়, দেশ-বিদেশের সকল শহরে গ্রামে ঘটে চলেছে প্রতিকারহীনভাবে। ওই নিষ্ঠুর অন্যায়ের প্রতিকার চাই। নারীর প্রতি সব ধরনের ক্রুর সহিংসতার প্রতিকার চাই। না হলে এ পৃথিবী কি বাসযোগ্য থাকবে আর?
কি নাম মেয়েটির? আমানত, দামিনী, উদয়া- যা-ই হোক। ও কি আর নেই আমাদের মাঝে? না, ও আছে। থাকবে। ওকে আমরা দেখছি। দেখবো।