বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১১

রাশিচক্রে আপনার ছেলেমেয়ের দেখভাল

বাচ্চাদের মন মেজাজ মরজি ভাব ভঙ্গি বোঝা দায়  কখন কোথায় কেন যে কি করে বসে ওরা! ওদের সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খান অনেক মা-বাবা। আর এই সামলানোর ঝক্কিটা মায়ের ওপর দিয়েই যায় বেশি  তাই ওঁরা শিশুর যত্ন পরিচর্যা লালন পালন ইত্যাদি নানা বিষয়ে বুদ্ধি-পরামর্শ নেন মুরুব্বিদের, অনেকে এ সব বিষয়ের নানা বই ঘেঁটে হন হদ্দ। আমরা বলছি, সময় পেলে রাশিচক্রটাও দেখে নিন একটু। দেখুন এ শাস্ত্র কি পরামর্শ দিচ্ছে ছেলেমেয়েদের দেখভালের ব্যাপারে।
মেষ
২১শে মার্চ থেকে ২০শে এপ্রিলের মধ্যে যাঁদের জন্ম ওঁরা মেষ রাশির জাতক-জাতিকা। এ রাশির শিশুরা দুরন্ত, দুর্ধর্ষ, অস্থির, চঞ্চল প্রকৃতির। ডাকাবুকো স্বভাবের কারণে ঝগড়া বাঁধিয়ে মারপিটও করতে পারে যখন তখন। তবে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাক্যুদ্ধই ঘটবে, কিল ঘুষি চড়-থাপ্পড় লাথি পর্যন্ত গড়াবে না হয়তো। মেষ রাশির শিশুরা স্বাধীনচেতা, মৌলিক চিন্তা-ভাবনার অধিকারী, ক্রীড়া-অনুরাগী হয়ে থাকে। স্কুলের যাবতীয় কার্যক্রমে ওদের দেখা যাবে সক্রিয় ভূমিকায়। এ কারণে ওরা ভোগ করবে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা। ফলে নিঃসঙ্গতায় ভোগার অবকাশই পাবে না।
    মেষ শিশুদের অস্থিরচিত্ততা দেখা দেয় গুরুতর সমস্যা হিসেবে। এই ছটফট স্বভাবকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, যদি মা-বাবা ধৈর্যের সঙ্গে দেখভাল করেন। ওদের বলতে হবে, লাফাবার আগে তাকিয়ে দেখো। যে কোনও কাজই করতে হবে ভেবেচিন্তে। আগে ভাবি, পরে করি। আরও বলতে হবে, অতীত থেকে শিক্ষা নাও। আগে যে ভুলগুলো হয়েছে তা যেন আর না হয়। সে সব ভুলের ব্যাপারে সতর্ক থাকো। কিছু না বললে বা না বোঝালে ওরা এ সব  থেকে আর শিক্ষা নেবে না কিছু।
    মেষ শিশুরা সবল স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়, ওদের সমস্যা কেবল মাথা নিয়ে। দুর্ঘটনা ঘটলে আঘাত লাগে ওখানেই। এজন্য সবসময় চলতে হবে মাথাটিকে রক্ষা করে।
    মেষ শিশুর মা যদি হন মেষ বা মীন আর বাবা হন সিংহ বা ধনু রাশির তাহলে মিলমিশ হবে চমৎকার। তবে মা যদি হন মকর বা কর্কট আর বাবা যদি হন তুলা বা বৃশ্চিক রাশির তাহলে চেঁচামেচি লেগেই থাকতে পারে দিন-রাত।
বৃষ
যাঁদের জন্ম ২১শে এপ্রিল থেকে ২০শে মে’র মধ্যে ওঁরা বৃষ রাশির জাতক-জাতিকা। এ রাশির শিশুরা সাধারণত একমুখী স্বভাবের হয়ে থাকে। তেমন মিশুক হয় না ওরা। একা-একা থাকতেই ভালবাসে বেশি। গান গাওয়া, ছবি আঁকা বা অন্য কোনও সৃষ্টিশীলতায় উৎসাহী হতে পারে। খেলাধুলার মধ্যে আগ্রহী হতে পারে একমাত্র বল জাতীয় খেলায়। অনেক সময় অলসতা পেয়ে বসে ওদের। পরে এ দোষ পরিণত হতে পারে স্বভাবে। মা-বাবাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে, কাজ দিয়ে, চেষ্টা চালাতে হবে  যাতে যতখানি সম্ভব কমিয়ে আনা যায় ওই অলসতা। অন্য কোনও দিকে আগ্রহী করে তুলতে পারলে নিজে থেকেই সক্রিয় হয়ে উঠবে ওরা। তবে বেশ ধৈর্য ধরতে হবে এ জন্য। খুব চাপ দিয়ে-দিয়ে কিছু করা ঠিক হবে না। কারণ ওদের মধ্যে গোঁ আছে খুব। একবার জেদ ধরে বসলে আর মানতে চাইবে না সহজে। ধমকে শাসিয়ে বাগে আনতে চাইলে বিগড়ে যেতে পারে একেবারে।
    মুটিয়ে যাওয়ার বিপদ আছে বৃষ শিশুদের। এ ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে আগে থেকেই। বেশি আহলাদ দেয়া যাবে না ওদের। পরে বায়না রোগ থেকে বাঁচানো যাবে না আর। বৃষ শিশুরা সাধারণত গলার অসুখবিসুখে ভোগে। তাই  খেয়াল রাখতে হবে এদিকটায়।
    বৃষ শিশুর মা যদি হন কর্কট বা বৃষ আর বাবা যদি হন মকর বা কন্যা রাশির তাহলে তো সোনায় সোহাগা। তবে মা যদি হন কুম্ভ বা ধনু আর বাবা যদি হন মেষ বা সিংহ রাশির তাহলে হুঁশ করেই চলতে হবে।
মিথুন
২১শে মে থেকে ২০শে জুনের মধ্যে যাঁদের জন্ম ওঁরা মিথুন রাশির জাতক-জাতিকা। এ রাশির শিশুদের সম্পর্কে বলা হয়  সবই সম্ভব, কিন্তু শান্ত শিষ্ট মিথুন শিশু সম্ভব নয়। ওরা ভাবে দ্রুত, বলেও দ্রুত। কৌতূহলের কোনও সীমা নেই ওদের। দিনে-রাতে হাজারটা প্রশ্ন শুনতে-শুনতে পাগল হওয়ার যোগাড় হবে মা-বাবার। শেষে যখন দেখা যাবে প্রশ্ন করাই সার, উত্তর শোনার জন্য একটু বসতেও পারছে না  তখন তা পৌঁছে যাবে বিরক্তির চরম সীমায়। কোনও কিছুতে মনোযোগ নেই, তাই শুরু করতে না করতে শেষ হয়ে যায় ওদের অনেক কাজ। সবচেয়ে ভাল ওদের একা থাকতে দেয়া। যখন যা করতে চায় তাতেই সায় দেয়া। কারণ ওরা সবসময়ই নানা কিছু নিয়ে মেতে থাকবে, শিখবে, জানবে, পরীক্ষা করে দেখবে। কোনও কিছু করতে বললে ওরা জিজ্ঞেস করবে, ‘কেন?’ যদি বলা হয়, ‘আমি বলেছি তাই’  তাহলেও শুনবে না ওরা। মা-বাবার জ্ঞানগম্যি ও সততা ওরা পরীক্ষা করে দেখে সব সময়।
    মিথুন শিশুরা সব সময় মেতে থাকতে চায় কোনও না কোনও কিছুতে। এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় শরীরে, স্বাস্থ্যে। এজন্য যতই চেঁচামেচি করুক বা অজুহাত দেখাক যথেষ্ট ঘুম ও বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে ওদের জন্য।
    মিথুন শিশুর মা যদি হন তুলা বা মিথুন আর বাবা যদি হন কুম্ভ বা সিংহ রাশির তাহলে ভাবনার কিছু নেই। তবে মা যদি হন বৃশ্চিক বা মীন আর বাবা যদি হন কন্যা বা ধনু রাশির তবে বুঝেশুনে কাজ করাই ভাল।
কর্কট
যাঁদের জন্ম ২১শে জুন থেকে ২২শে জুলাইয়ের মধ্যে ওঁরা কর্কট রাশির জাতক-জাতিকা। এ রাশির শিশুরা অত্যন্ত স্পর্শকাতর, ভদ্র শান্ত ও কল্পনাপ্রবণ। এজন্য নিঃসঙ্গ থাকে। মোটাসোটা গড়ন এবং আস্তে ধীরে চলে ও কাজ করে বলে ওরা ঠাট্টা-বিদ্রƒপের শিকার হয় পাড়ায় ও স্কুলে। মা-বাবাকে তাই স্নেহ-আদরে ভরিয়ে রাখতে হবে ওদের। কর্কট শিশুরা যথেষ্ট মায়া-মমতাময়, তবে ওদের অভিমানও বেশি। এজন্য আত্মঘাতী কাজ করে বসে কখনও। এজন্য মা-বাবাকে কৌশলী হতে হবে, নানাভাবে বোঝাতে হবে অভিমান ও আত্মঘাত খুবই হাস্যকর ব্যাপার।
    বুক ও শ্বাসনালীর অসুখে ভোগার আশঙ্কা আছে কর্কট শিশুদের। দেখুন ঠাণ্ডা যাতে না লাগে। পরে বড় সমস্যা হতে পারে।
    কর্কট শিশুর মা যদি হন মীন বা কর্কট আর বাবা যদি হন বৃশ্চিক বা বৃষ রাশির তবে মানানসই হবে খুব। এর উলটো হবে যদি মা হন সিংহ বা তুলা আর বাবা হন মেষ বা ধনু রাশির।
সিংহ
২৩শে জুলাই থেকে ২২শে অগস্টের মধ্যে যাঁদের জন্ম ওঁরা সিংহ রাশির জাতক-জাতিকা। এই রাশির শিশুদের সহজেই দলের মধ্যে চেনা যায় আলাদা করে। দলে ও থাকে নেতা, কর্মী নয়। নেতৃত্ব হারালে ও গড়ে নেয় আলাদা দল। স্বভাবে ও অহঙ্কারী, বেপরোয়া। এমনিতে মনে হয় না কোনও আদর-সোহাগের ধার ধারে, কিন্তু বাইরের ওই দুর্ধর্ষ ভাবের আড়ালে রয়েছে স্নেহময় প্রীতিপূর্ণ কোমল মন। ওই মন মা-বাবার আদর-সোহাগের কাঙাল।
    বড় হয়ে টাকা-পয়সা বড্ড ফেলাছড়া করে সিংহ রাশির জাতক-জাতিকারা। আরাম আয়েশ বিলাস ব্যসনে মত্ত থাকে। তাই ছোটবেলাতেই ওদের মগজে ঢুকিয়ে দিতে হবে আর্থিক বিষয়বুদ্ধি। বোঝাতে হবে  জীবনে ভাল কিছু পেতে হলে টাকা লাগে। আর টাকা পাওয়া যায় কাজ করে, উদ্যোগ নিয়ে।
    সিংহ শিশুদের শরীর স্বাস্থ্য যেমন থাকতে পারে সুস্থ সবল তেমন সারা বছর অসুখবিসুখও লেগে থাকতে পারে। মাঝেমধ্যে গোলমাল বাঁধিয়ে বসতে পারে পাকস্থলী। কাজেই নজর রাখতে হবে ওটার দিকে।
    সিংহ শিশুর মা যদি হন সিংহ বা মীন আর বাবা যদি হন ধনু বা মেষ তাহলে মানিয়ে যাবে বেশ। তবে মা যদি হন মকর বা কন্যা আর বাবা যদি হন বৃশ্চিক বা কর্কট রাশির তাহলে বিড়ম্বনা ঘটতে পারে পদে-পদে।
কন্যা
যাঁদের জন্ম ২৩শে অগস্ট থেকে ২২শে সেপটেম্বরের মধ্যে ওঁরা কন্যা রাশির জাতক-জাতিকা। এই রাশির শিশুরা সব কিছু সাজানো গোছানো দেখতে ভালবাসে। ওদের এই সুশৃঙ্খল স্বভাব মা-বাবাকে খুশি করে, তবে কিছু পরেই বেরিয়ে আসে ওদের খুঁতখুঁতে স্বভাব। সেই খুঁত ধরার ঝোঁক থেকে রেহাই পান না মা-বাবাও। কন্যা শিশুরা জন্ম থেকেই যেন আসে বুদ্ধি-বিবেচনা নিয়ে, আর্থিক ব্যাপারেও দেখা যায় ওদের বিশেষ বিবেচনা। জীবনকে উপভোগ করা, ভালবাসা  এ সব ওরা অত বোঝে না। তাই মা-বাবাকে এ গুণগুলি শেখাতে বোঝাতে হবে ওদের।
    কন্যা শিশু খুব খেটেখুটে সব কাজ করতে চায়। এই অতিরিক্ত খাটুনির চাপ পড়ে ওদের শরীর স্বাস্থ্যে। এজন্য ওদের মধ্যে অবসর অবকাশ ভোগ করার, হাসিখুশিতে মেতে ওঠার মন গড়ে দিতে হবে।
    কন্যা শিশুর মা যদি হন কন্যা বা তুলা আর বাবা যদি হন বৃষ বা মকর রাশির তাহলে মিলমিশটা হবে ভাল। তবে মা যদি হন মিথুন বা কুম্ভ আর বাবা যদি হন বৃশ্চিক বা সিংহ রাশির তাহলে খিটিমিটি লেগেই থাকবে।
তুলা
২৩শে সেপটেম্বর থেকে ২২শে অকটোবরের মধ্যে যাঁদের জন্ম ওঁরা তুলা রাশির জাতক-জাতিকা। এ রাশির শিশুরা থাকে হাসিখুশি প্রাণচঞ্চল। আকর্ষণীয় স্বভাবের জন্য ওদের বন্ধুবান্ধব থাকে অনেক। গান গাওয়া, ছবি আঁকা বা অন্য কোনও সৃষ্টিশীল কাজে জড়িত হয় ওরা। অল্প বয়সেই আকৃষ্ট হয় বিপরীত লিঙ্গের প্রতি। মজা করতে এক বন্ধুর সঙ্গে আরেক বন্ধুর ঝগড়া লাগিয়ে দেয় প্রায়ই। মা-বাবাও হন ওদের এই ‘মজার খেলা’র শিকার। তুলা শিশুদের তাই বিশেষ যতœ নিয়ে শেখাতে হবে আনুগত্য ও অকপটতা বিষয়ক কিছু নীতি ও রীতি।
    তুলা শিশুরা সুস্থ সবলই থাকে, পরবর্তী জীবনে ভুগতে দেখা দেয় কিডনি সংক্রান্ত জটিলতায়।
    ওদের মা যদি হন মিথুন বা তুলা আর বাবা যদি হন কুম্ভ বা সিংহ রাশির তাহলে কোনও সমস্যা হবে না লালন পালনে। কিন্তু মা কর্কট বা মকর আর বাবা মেষ বা মীন রাশির হলে মুশকিল হতেই পারে।
বৃশ্চিক
যাঁদের জন্ম ২৩শে অকটোবর থেকে ২১শে নভেম্বরের মধ্যে ওঁরা বৃশ্চিক রাশির জাতক-জাতিকা। এ রাশির শিশুরা অত সামাজিক হয় না, নিজেদের মধ্যেই গুটিয়ে থাকে অনেকখানি। বাইরের জীবনের অনেক কিছুই গ্রহণ বা অবলম্বন করতে পারে না ওরা। চারপাশের নানা কিছু দেখে হতাশায় ভোগে, সন্দেহপ্রবণও হয়ে পড়ে। কোনও সঙ্ঘ-সমিতির কাজে জড়িয়ে দিতে পারলে এ অবস্থার উন্নতি হবে কিছুটা। ওদের প্রতি দিতে হবে প্রচুর মনোযোগ, আদরও ঢেলে দিতে হবে প্রচুর। বাইরে কঠিন দেখালেও বৃশ্চিক শিশুরা ভেতরে-ভেতরে যথেষ্ট মায়ামমতাময়। ঈর্ষাতেও কাতর হয় ওরা। নিজেকে অবহেলিত ভাবলে ফুঁসে ওঠে মুহূর্তে। তবে ওদের বেশির ভাগ ফোঁসফোঁসানি মা-বাবার আদর কাড়ার জন্যই।
    বৃশ্চিক শিশুরা অসুখ-বিসুখে ভোগে না তেমন, তবে শরীর স্বাস্থ্যের ব্যাপারে মনোযোগী নয় ওরা। এজন্য নজর দিতে হবে এদিকে।
    বৃশ্চিক শিশুদের মা যদি হন বৃশ্চিক বা কন্যা আর বাবা যদি হন মীন বা কর্কট রাশির তাহলে ভাবনার কিছু নেই। কিন্তু মা যদি হন মকর বা ধনু আর বাবা যদি হন সিংহ বা মেষ তাহলে খবর আছে।
ধনু
২২শে নভেম্বর থেকে ২১শে ডিসেম্বরের মধ্যে যাঁদের জন্ম ওঁরা ধনু রাশির জাতক-জাতিকা। এ রাশির শিশুরা খেলাধুলা খুব ভালবাসে, তাই সঙ্গীসাথির কোনও অভাব হয় না ওদের। ওরা ভাবে, পৃথিবীটা আমোদ-স্ফূর্তির জন্য। এজন্য লেখাপড়ায় মনোযোগী করাতে চাইলে একটু কঠোর হতে হবে মা-বাবাকে। স্বাধীনতা ভাল, কিন্তু স্বেচ্ছাচার ভাল নয়  এটা ভাল করে বোঝাতে হবে ওদের। সেই সঙ্গে সচেতন করতে হবে নিয়মকানুন বিধিবিধান সম্পর্কে।
    বাধা পেলে বিদ্রোহ করে বসে ধনু শিশু, এজন্য ওদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হয়ে পড়ে বেশ কঠিন। তবে সোহাগে শাসনে সম্ভব হতে পারে আপাত অসম্ভবও।
    ধনু শিশুরা নিজেরই কারণে কোথাও চোট পেয়ে ভুগতে পারে, এমনিতে অসুখে বিসুখে ভোগার আশঙ্কা কম।
    ধনু শিশুদের মা যদি হন ধনু বা তুলা আর বাবা যদি হন মেষ বা সিংহ রাশির তাহলে মিলমিশটা হবে ভাল। কিন্তু মা যদি হন বৃশ্চিক বা মিথুন আর বাবা যদি হন কর্কট বা মীন রাশির তাহলে খিটিমিটি লেগেই থাকবে হয়তো।
মকর
যাঁদের জন্ম ২২শে ডিসেম্বর থেকে ১৯শে জানুয়ারির মধ্যে ওঁরা মকর রাশির জাতক-জাতিকা। এ রাশির শিশুরা লেখাপড়ায় মনোযোগী থাকে বেশ। ভবিষ্যতে বড় কিছু হওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোয় ওরা। তবে এই এগোনোর গতি দ্রুত নয়, ধীর। এজন্য ওদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা ঠিক হবে না। ওদের সাফল্য আসবে বিলম্বেই। মকর শিশুদের জন্য বড় বিপদ হয়ে আসে মন-মরা ভাব। এ ব্যাপারে ঠিকমতো ওদের বোঝানো-সোঝানো না গেলে এটা হয়ে উঠতে পারে স্থায়ী এক সমস্যা। জোর দিতে হবে ওদের বুদ্ধি-বিবেচনার ওপর। এই বিবেচনার মাধ্যমেই কাটতে পারে ওদের নৈরাশ্য ভাব।
    মন-মরা ভাব আর স্নায়বিক চাপের সূত্রে পাকস্থলীর জটিলতায় ভুগতে পারে মকর শিশুরা। এমনিতে শরীর স্বাস্থ্য ওদের ভালই থাকবে।
    মকর শিশুর মা মকর বা কর্কট আর বাবা বৃষ বা কন্যা রাশির হলে খুব ভাল। তবে মা মেষ বা কুম্ভ আর বাবা ধনু বা সিংহ রাশির হলে বুঝেসুঝে চলাই ভাল।
কুম্ভ
২০শে জানুয়ারি থেকে ১৯শে ফেব্র“য়ারির মধ্যে যাঁদের জন্ম ওঁরা কুম্ভ রাশির জাতক-জাতিকা। এই রাশির শিশুরা সব কিছু চায় ঠিকঠাক জানতে। ওরা ভালবাসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর সত্যের অন্বেষণ। মিছে কথা বললে মা-বাবাও শ্রদ্ধা হারাবে ওদের। নির্লিপ্ত ও মায়ামমতাহীন ভাবের কারণে ওরা ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়, আসলে ওদের স্নেহ-ভালবাসার ভঙ্গি অমনই উচ্ছ্বাসহীন। তবে মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব উষ্ণতা দেখালে সহজ হয়ে পড়বে ওরা। তবে ওই উষ্ণতা যেন দেখানো না হয় বেশি মাত্রায়।
    কুম্ভ শিশুদের আছে রক্তদুষ্টির আশঙ্কা, এমনিতে সুস্থ সবল থাকে ওরা।
    ওদের মা যদি হন কুম্ভ বা মীন আর বাবা যদি হন কন্যা বা মিথুন রাশির তাহলে চিন্তার কিছু থাকে না। কিন্তু মা যদি হন মকর বা কর্কট আর বাবা যদি হন কন্যা বা বৃষ রাশির তাহলে নানা রকম বিপত্তির আশঙ্কা থাকতেই পারে।
মীন
যাঁদের জন্ম ২০শে ফেব্র“য়ারি থেকে ২০শে মার্চের মধ্যে ওঁরা মীন রাশির জাতক-জাতিকা। এই রাশির শিশুরা হয়ে থাকে মধুর স্বভাবের, সবাই ভালবাসে ওদের। এজন্য আবার আদরে আহলাদে  বখেও যেতে পারে ওরা। তারপর ওদের আছে নিজেদের মতো করে চলার বুদ্ধি আর গোপনীয়তা বজায় রাখার প্রবণতা। এ ক্ষেত্রে মা-বাবার প্রায় কিছুই করার থাকে না  সন্তানের জন্য আক্কেল সেলামি দেয়া ছাড়া। মীন শিশুকে শৃঙ্খলায় আনতে কিছু কঠোরই হতে হবে মা-বাবাকে। কারণ ও যদি সব সময় নিজের মতো করে চলতে চায় তাহলে শৈশবে যা-ই হোক সাবালক জীবনে দুর্ভাগ্য ডেকে আনতে পারে তা। এ জন্য ওর মধ্যে এ প্রবণতাকে বেশি বাড়তে দেয়া ঠিক হবে না। ওদের নিয়ে আরেক সমস্যা  খাবার প্রায় মুখেই তুলতে চায় না ওরা। এদিকটায়ও নজর রাখতে হবে মা-বাবার।
    মীন শিশু অল্পতেই কাবু হয়ে পড়ে শরীর স্বাস্থ্যে, তবে এটা সম্ভব হবে কাটিয়ে ওঠা। পা নিয়ে সমস্যা থাকে ওদের। খেয়াল রাখতে হবে ওদিকে।
    মীন শিশুদের জন্য মা ভাল কর্কট বা বৃষ আর বাবা ভাল বৃশ্চিক বা মীন রাশির। কিন্তু মা সিংহ বা মকর আর বাবা কন্যা বা ধনু রাশির হলে সমস্যা হতেই পারে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন