বুধবার, ১৩ জুন, ২০১২

ইউনূসকে নিয়ে চলচ্চিত্র, নামভূমিকায় ইরফান খান

মহাজনেরা বলেছেন, স্বদেশে পূজ্যতঃ রাজা, বিদ্বান সর্বত্র পূজ্যতে- রাজা সম্মান পান নিজ দেশে, কিন্তু বিদ্বান সম্মান পান সব দেশে। তবে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস শ্রদ্ধা-ভালবাসায় বিশ্বজয়ী হলেও বিদ্বেষের শিকার হয়েছেন স্বদেশের একটি মহলের। আক্রান্ত হয়েছে এবং হচ্ছে তার গৌরবকীর্তি গ্রামীণ ব্যাংক। কিন্তু যত গঞ্জনা লাঞ্ছনা এই স্বদেশী মহলে, আন্তর্জাতিক মহলে তত শিখরস্পর্শী হয়ে উঠছে তার মান ও মর্যাদা। সর্বশেষ তার প্রতি সম্মান জানিয়ে কথা বলে, চিঠি লিখে ব্যঙ্গ ভ্রুকুটির শিকার হয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন পর্যন্ত। তাহলেও আমাদের এই কীর্তিধন্য মানুষটির প্রতি থেমে নেই বিশ্বসমাজের সশ্রদ্ধ অভিনন্দন। সর্বশেষ প্রখ্যাত ইতালিয়ান চলচ্চিত্রকার মারকো আমেনতা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন তার জীবনীচিত্র ‘ব্যাংকার টু দ্য পুওর’। এ ছবিতে নামভূমিকায় অভিনয় করবেন বলিউড-হলিউডের নন্দিত অভিনেতা ইরফান খান। ‘পান সিং তোমার’-এর পর এটি তার দ্বিতীয় জীবনীচিত্র। মীরা নায়ার-এর ‘দ্য নেইমসেক’ ছবিতে এক বাঙালি ভদ্রলোকের চরিত্রে তার অভিনয় দেখার পর ইরফান খানকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চরিত্র মনোনীত করেন পরিচালক।
‘ব্যাংকার টু দ্য পুওর’-এর চিত্রনাট্য রচিত হয়েছে ড. ইউনূসের ২০০৬ সালে নোবেল প্রাইজ পাওয়ার পাঁচ বছর আগে- ২০০১ সালে প্রকাশিত একই নামের এক বেস্টসেলার অবলম্বনে। তখন আন্তর্জাতিক মহলে তিনি ছিলেন প্রায় অপরিচিত। আমেনতা চিত্রনাট্য লেখেন সেরজো দোনাতি’র সঙ্গে মিলে। এ চিত্রনাট্যের জন্য ট্রাইবেকা চলচ্চিত্র উৎসবে তাকে পুরস্কৃত করেন হলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা রবার্ট ডি নিরো। ওই সময়ই এর চলচ্চিত্র-স্বত্ব কিনে নেন মারকো আমেনতা, সিমোনেতা আমেনতা ও তার ইউরোফিল্ম কোম্পানি।
‘দি অ্যামেজিং স্পাইডারম্যান’-এর পর ইরফান খানের এটি দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ছবি। তিনি বলেন, এ ছবি নিয়ে কথা চলছে অনেক দিন ধরেই। প্রস্তাব পেয়ে সম্মতি জানিয়েছি আমি। তার এক বন্ধু বলেন, এমন একজন বিশ্বখ্যাত জীবিত মানুষের চরিত্র রূপায়ন সহজ কথা নয়। ইরফান তাই শিগগিরই ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করবেন, যত বেশি সম্ভব তার সঙ্গে সময় কাটাবেন। ‘পান সিং তোমার’ রূপায়নে কল্পনার আশ্রয় নিয়েছেন তিনি, কিন্তু এখানে তো চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। কারণ এ চরিত্র বাস্তব। এ চরিত্রের অভ্যন্তরে ঢুকতে কয়েক মাস লেগে যাবে তার। ইরফান বলেন, কাজ শুরু হবে ডিসেম্বর থেকে। কাজেই এর মধ্যেই হোমওয়ার্ক সেরে ফেলা সম্ভব হবে আমার পক্ষে।
দ্য সিসিলিয়ান গার্ল (২০০৯), দ্য গোস্ট অভ কোরলিওন (২০০৫), দ্য লাস্ট গডফাদার (২০০৪), ডায়েরি অভ এ সিসিলিয়ান রিবেল (১৯৯৫), লেটার ফ্রম কিউবা, বর্ন ইন বসনিয়া প্রভৃতি কাহিনী ও প্রামাণ্য চিত্রের পরিচালক-প্রযোজক মারকো আমেনতা একজন ফটোজার্নালিস্ট-ও। বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিত আমেনতাকে ‘ব্যাংকার টু দ্য পুওর’-এর চিত্রনাট্য রচনায় সহায়তাকারী সেরজো দোনাতি একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রনাট্যকার। তার রচিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন দ্য ওয়েস্ট (১৯৬৮), ফিস্টফুল অভ ডাইনামাইট (১৯৭১), ওরকা (১৯৭৭), হলোকাস্ট ২০০০ (১৯৭৭), র ডিল (১৯৮৬), ম্যান অন ফায়ার (১৯৮৭) প্রভৃতি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন